গান্ধীজীর রাজনৈতিক দর্শনের মূল সূত্র গুলি আলোচনা করো

Or

গান্ধী চিন্তাধারার মূল বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা কর।

Ans:-

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

গান্ধীজীর রাজনৈতিক দর্শন:

গান্ধীজী কোন রাষ্ট্র দার্শনিক ছিলেন না মরো রাস্কিন ট্রলস্টয় এর লেখা ভগবত গীতা উপনিসর রামায়ণ-মহাভারত বৌদ্ধ ও জৈন ধর্ম থেকে প্রাপ্ত শিক্ষাকে যুক্ত করে গান্ধীজি তার নিজস্ব মতবাদ তৈরি করেছেন। তবে গান্ধীজীর ভাষায় গান্ধীবাদ বলে কিছুই নেই। নতুন কোন নীতি বা তথ্যের স্রষ্টা হিসাবে আমি কিছু দাবি করি না।

গান্ধীজীর রাজনৈতিক দর্শনের মূল সূত্র:-

গান্ধীজীর রাজনৈতিক দর্শন এর মূল সূত্র বা বৈশিষ্ট্য গুলি হল——

      অহিংসা:-

গান্ধীজীর মতাদর্শে মূল মন্ত্র ছিল অহিংসা এর সম্পর্কে তিনি শিং স্বরাজ গ্রন্থে বিস্তারিত তথ্য আলোচনা করেছেন। তার দৃষ্টিভঙ্গিতে অহিংসা এক চরম তম স্বার্থহীনতা এবং নেতিবাচক ভালোবাসা। ও হিংসা দুর্বলতা নয় এক নৈতিক ও সদার্থ শক্তি। সত্য প্রেম ভালোবাসার মতো মানসিক গুণাবলী গান্ধীজী, অহিংসার ধারণার জড়িত।

       সত্যাগ্রহ:-

সত্যাগ্রহের অভিধানিক অর্থ হলো ‘সত্যের প্রতি আগ্রহ’গান্ধীজীর সত্যাগ্রহের আদর্শ হলো সত্যের জন্য তপস্যা প্রতিক্ষেপ এর হৃদয়ের পরিবর্তন করে এ এর বিরুদ্ধে প্রতিরোধ। সত্যাগ্রহ দুর্বল তন্ত্র নয় এখানে কাপুরুষতার কোনো স্থান নেই এটি একটি তাত্ত্বিক শক্তি।

       সর্বোদয়:-

সর্বদাই শব্দটি সর্ব এবং উদয় এই দুই শব্দ নিয়ে গঠিত যার অর্থ সকলের কল্যাণ। সমাজে এক উন্নত নৈতিক পরিবেশ গড়ে তোলায় এর উদ্দেশ্য। সত্য ও অহিংসা এবং সৎ উভয়ে এই পরিবেশ গড়ে তোলা সম্ভব। সর্বদয় সমাজের সকলের সমান এবং এর মূল কথা হলো আত্মত্যাগ যদিও বৃহৎ শিল্প সভ্যতাকে সর্বদয় বলে।

      স্বরাজ সম্পর্কে ধারণা:-

স্বরাজ কথাটির অর্থ হলো শাসন। গান্ধীজীর মতে স্বরাজ হল এক আদর্শ মানব সমাজ এক উন্নত তর সামাজিক ব্যবস্থা যার মূল ভিত্তি হলো সাম্য স্বাধীনতা এবং ন্যায় বিচার।

     রাষ্ট্র সম্পর্কিত ধারণা:-

গান্ধীজীর মতে বলপ্রয়োগ হল আধুনিক রাষ্ট্রের ভিত্তি। মানুষের দুর্বলতার জন্য রাষ্ট্র মানব প্রতিষ্ঠান সৃষ্টি হয়। তিনি রাষ্ট্রের সার্বভৌমিকতার পরিবর্তে জনগণের সার্বভৌমিকতার বিশ্বাসী ছিলেন। তার মতে সেই রাষ্ট্র সবচেয়ে ভালো, যা কম শাসন করে এবং সেই সমাজ ব্যবস্থার ভিত্তি হবে রাষ্ট্রহীন গণতন্ত্র আর গান্ধীজীর কল্পিত এই অহিংস গণতান্ত্রিক সামাজিক হলো ‘রাম রাজ্য’।

     গ্রামীণ পুনর্গঠনের ধারণা:-

গান্ধীজীর বিশ্বাস করতেন ভারতে, প্রাণশক্তি গ্রামগুলির উন্নতির মধ্যে নিহিত রয়েছে, তাই ভারতের পুনর্গঠনের জন্য তিনি সমরাই প্রথা প্রচলন জমিদারি প্রথার সংস্কার গ্রামীণ শিল্পের বিকাশ প্রভৃতির ওপর জোর দিয়েছিলেন।

     গণতন্ত্র সম্পর্কিত ধারণা:-

গান্ধীজীর মতো গণতন্ত্র ও হিংসা পাশাপাশি থাকতে পারেনা। তিনি পশ্চিমী গণতন্ত্রের সমালোচনা করে একে নামমাত্র গণতন্ত্র বলেছেন। তার মতে যা মানুষ হিসাবে ভালো ও খাটি তার মধ্যে থেকে গণতন্ত্র প্রতিনিধি বাছাই করতে হয়।

মূল্যায়ন:-

পরিশেষে বলা যায় বর্তমানে ভারতবর্ষে সমাজ নীতি ও রাজনীতি এবং অর্থনীতির ক্ষেত্রে গান্ধীজীর রাষ্ট্র সংক্রান্ত বিভিন্ন দৃষ্টিভঙ্গি অনুসরণ করা হয়। এখানে গান্ধীজীর রাজনৈতিক দর্শনের তাৎপর্য ও গুরুত্ব বিরাজমান।

3.5/5 - (13 votes)

Leave a Comment