ভূমিকা:-
ভারতের উদারনৈতিক ও গনতান্ত্রিক শাসন ব্যবস্থা বিচার ব্যবস্থা গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। দেশের সংবিধান রচিয়তাগন সমগ্রহ দেশের ঐক্য ও সংগ্রস্ত রক্ষা করার সমগ্র দেশে এক অখন্ড বিচার ব্যবস্থা চালু করেছে যার শীর্ষে রয়েছে সুপ্রিম কোর্ট।
সুপ্রিমকোর্টের গঠন:-
সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি সংখ্যা পার্লামেন্ট উপর ন্যস্ত রয়েছে। তবে ১৯৮৬ খ্রিঃ পার্লামেন্ট আইন প্রণয়ন করা বিচারপতি সংখ্যা করেছে ২৬ জন। এবং ২০১১খ্রিঃ পার্লামেন্ট আইন প্রণয়ন করে তা ৩১ জন করেছে। কিন্তূ বর্তমানে ১ জন প্রধান বিচারপতি সহ ৩৩ বাকি বিচারপতি নিয়ে ৩৪ জন রয়েছে।
যোগ্যতা:-
সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতিদের পথপার্থিক নিন্মলিখিত যোগ্যতার প্রয়োজন।
১. ভারতীয় নাগরিক হতেই হবে।
২. কোন এক বা একাধিক হাইকোর্টের ৫ বছর বিচারপতি হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
৩. কিংবা, ১০ বছর যেকোনো হাইকোর্টে অ্যাডভোকেট হিসাবে কাজ করার অভিজ্ঞতা থাকতে হবে।
নিয়োগ পদ্ধতি:-
সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতিকে নিযুক্ত করে রাষ্ট্রপতি। আবার অন্যান্য বিচারপতিদের নিয়োগ করার সময় রাষ্ট্রপতি প্রধান বিচারপতির সাথে পরামর্শ করেন।
কার্যকাল:-
সুপ্রিমকোর্টের বিচারপতি ৬৫ বছর পর্যন্ত পদে অসীম থাকতে পারে। তবে তিনি স্বেচ্ছায় ভাবে পদত্যাগ করতে পারে। অথবা পার্লামেন্টের ইমপিচমেন্ট পদ্ধতির সাহায্যে তাকে অপসারণ করা যেতে পারে। ( সংবিধানের ৬১ ধারা নং অনুসারে)
বেতন ও ভাতা:-
ভারতের সুপ্রিমকোর্টের প্রধান বিচারপতির মাসিক বেতন ২,৮০,০০০ এবং অন্যান্য বিচারপতির মাসিক বেতন ২ লক্ষ ৫০ হাজার। যা ভারতের সঞ্চিত তহবিল থেকে দেওয়া হয়।
সুপ্রিমকোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী:-
সুপ্রিমকোর্টের ক্ষমতা ও কার্যাবলী নিম্নলিখিত চার ভাগে ভাগ করা যায়। সেগুলি হল–
ক. মূল এলাকা:-
সুপ্রিমকোর্টের মূল এলাকা অন্তর্ভুক্ত বিষয় গুলি হল–
১.কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এক বা একাধিক রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে।
২.কেন্দ্রীয় সরকারের সঙ্গে এবং এক বা একাধিক রাজ্যসরকারের অন্য রাজ্যসরকার সঙ্গে বিরোধ।
৩.দুই বা ততোধিক রাজ্যের নিজের মধ্যে বিরোধ।
৪.রাষ্ট্রপতি উপরাষ্ট্রপতি নির্বাচন সংক্রান্ত বিরোধ। সংবিধানের চালুর পূর্বে ও পরে যেসব চুক্তি স্বাক্ষরিত হয়েছিল তা বল বোধ করার ক্ষমতা মূল এলাকায় নেই।
খ.আপিল এলাকা:-
সুপ্রিমকোর্টের আপিল এলাকা নিম্নলিখিত চার ভাগে ভাগ করা যায়।
১.সংবিধানের ব্যাখ্যা সংক্রান্ত আপিল:-
দেওয়ানী, ফৌজদারী বা অন্য মামলার ক্ষেত্রে হাইকোর্ট যদি এই মর্মের সার্টিফিকেট প্রদান করে। মামলাটির সঙ্গে যদি সংবিধানের গুরুত্বপূর্ণ বিষয় জড়িয়ে রয়েছে তবেই সেটা সুপ্রিমকোর্টে আপিল করা যায়।
২.দেওয়ানী আপিল:-
হাইকোর্ট যদি মনে করে ফৌজদারি মামলাটির সঙ্গে আইনের গুরুত্বপূর্ণ প্রশ্ন জড়িয়ে রয়েছে তবে সুপ্রিমকোর্ট আপিল করা যায়।
৩.ফৌজদারি আপিল:-
ফৌজদারী মামলার নিম্নলিখিত ক্ষেত্রে সুপ্রিমকোর্টে আপিল করা যায়।
i.নিম্নতর আদালত থেকে কোনো ব্যক্তিকে আপিল বিচারের হাইকোর্ট মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিলে।
ii. নিম্নতর আদালত থেকে কোন মামলা হাইকোর্ট নিজের হাতে তুলে নিলে হাতে এবং অভিযুক্ত ব্যক্তিকে মৃত্যুদণ্ডের নির্দেশ দিলে।
iii. মামলাটির সুপ্রিম কোর্টে আকিলযোগ্য কিনা এই মর্মে হাইকোর্টকে প্রমাণপত্র দিতে হবে।
৪.বিশেষ অনুমোদিত সূত্রে আপিল:-
সংবিধানের ১৩৬ (১) নং ধারা অনুসারে যেকোনো আদালতের ট্রাইবুনাল রায় বা আদেশের বিরুদ্ধে আপিল করার বিশেষ অনুমতি দিলে।
গ.পরামর্শদান এলাকা:-
সংবিধানের ১৪৩ (১) নং ধারায় বলা হয়েছে যে, সর্বজনীন গুরুত্ব রয়েছে। এমন কোনো আইন বা তথ্য সংক্রান্ত প্রশ্ন রাষ্ট্রপতি সুপ্রিমকোর্টের পরামর্শ চাইতে পারে। আবার সংবিধানের ১৪৩ (২) নং ধারানুযায়ী , সংবিধানের চালু হওয়ার আগে সম্পাধিত কোনো সন্ধি, চুক্তি বা অঙ্গীকারপত্র যা আজও পর্যন্ত বলবৎ রয়েছে সে বিষয়ে কোনো বিরোধ দেখাদিলে সুপ্রিমকোর্টের কাছে রাষ্ট্রপতি আইনগত পরামর্শ চাইতে পারেন।
ঘ. লেখজারি এলাকা:-
ভারতের সংবিধানের তৃতীয় অধ্যায়ে উল্লেখিত মৌলিক অধিকার গুলি রক্ষা করার জন্য ৩২ নং ধারানুযায়ী সুপ্রিমকোর্টে পাঁচ ধরনের লেখ বা আদেশ জারি করতে পারে। যথা- বন্দিপ্রত্যক্ষীকরণ , পরমাদেশ, প্রতিষেধ, উৎপ্রেষণ এবং আধিকার পৃচ্ছা।
উপসংহার:-
পরিশেষে বলা যায় যে ভারতীয় সুপ্রিমকোর্টের ক্ষমতা ব্যাপক ও বৈচিএপূর্ন। এই আদালত একাধারে যুক্তরাষ্টীয় আদালত ,সর্বোচ্চ আপিল আদালত, সংববিধান রক্ষক ও চূড়ান্ত ব্যাখ্যা কারক। সংবিধানে বিচারে সুপ্রিমকোর্ট গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। তবে এটা দুঃখের বিষয় যে এই আদালত শুধুমাত্র ধনী ব্যক্তিদের জন্যই ন্যায় প্রদান করে থাকে গরিব মানুষ তো এর দরজা পর্যন্তও যেতে পারে না।
Helpful average answer 💯