চিনের ৪ঠা মে আন্দোলনের কারণ বিশ্লেষণ কর।এই আন্দোলনের প্রভাব আলোচনা কর।

অথবা

চীনের 4ঠা মে আন্দোলনের কারণ ও ফলাফল আলোচনা করো।


ভূমিকা:-

1911 খ্রিস্টাব্দে এক প্রজাতান্ত্রিক বিপ্লবের মধ্য দিয়ে চিনে একটি প্রজাতান্ত্রিক সরকার প্রতিষ্ঠিত হয়। তবে এই সরকারের কাজকর্মে সাধারণ মানুষ বৃক্ষ বদ্ধ হয়ে ওঠে। পাশাপাশি বিংশ শতকের শুরু থেকেই চীনে বিদেশীদের অধিপত্য ও বিদেশীদের চাপিয়ে দেওয়া বিভিন্ন অসম চুক্তির বিরুদ্ধে দেশপ্রেমী চিনাদের মধ্যে ক্রমাগত ক্ষোভ জমতে থাকে। যার ফলস্বরূপ চীনের জাতীয়তাবাদী ও বুদ্ধিজীবী মানুষেরা 1919 খ্রিস্টাব্দে 4 মে বা মেফোর্ট আন্দোলনের সূচনা ঘটায়।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

4মে আন্দোলনের কারণ:—

 ১. ইউ আন সি কাই এর প্রতিক্রিয়াশীল নীতি:—

১৯১২ খ্রিস্টাব্দে চীনের সামগ্রিক নেতা ইউয়ান্সিকাই রাষ্ট্রপতি হিসাবে নিযুক্ত হওয়ার পর চীনে একনায়কতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করেন। কুওমিংটাং দলকে তিনি নিষিদ্ধ করেন। তার এই কাজকর্ম গুলি জনগণকে বৃক্ষ বদ্ধ করে তোলে।

  ২. জাপানের ২১ দফা সর্ত:—

জাপান চীনকে দখল করার জন্য ১৯১৫ খ্রিস্টাব্দে চীনের কাছ থেকে ২১ দফা শর্ত দাবি করেন। এই দাবিগুলি চীনের সর্বভৌমত্বের পরিপন্থী ছিল তাই চীনের জন মানুষের এই অন্যায়ের দাবির বিরুদ্ধে তীব্র প্রতিক্রিয়া শুরু হয়।

    ৩. সাংস্কৃতিক জাগরণ:—

4 মে আন্দোলনের উপকার ছিল চীনের ছাত্রসমাজ, বুদ্ধিজীবী সম্প্রদায় যারা পাশ্চাত্য গতিশীল ভাবধারায় অনুপ্রাণিত হয়ে চীনে একটি নতুন গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করতে চেয়েছিল।

   ৪. প্রত্যক্ষ কারণ:—

১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে প্যারিসের শান্তি সম্মেলনে চীন জাপানের কাছে একুশ দফা দাবিসহ অসমা চুক্তি এবং সান্ট্রং প্রদেশে জাপানি কর্তৃত্ব বাতিলের দাবি জানাই।  কিন্তু ইউরোপীয় কর্তৃপক্ষ চীনের কথায় কর্ণপাত না করায় চীনের আপামর জনগণ আসাহতো হয়।

আন্দোলনের সূচনা:—

এরি প্রতিবাদে পিকিং বেইজিং বিশ্ববিদ্যালয়ের অধ্যাপক ও ছাত্রসমাজ ১৯১৯ খ্রিস্টাব্দে ৪ মে পিকিং এর টিএন আন মেন স্কয়ারে মিলিত হয়। এই স্বভাবে সেতারা শপথ নেয় যে তারা চীনের ভূখণ্ডের কোন অংশ জাপানকে ছেড়ে দেওয়া হবে না। বিক্ষোভ ও ধর্মঘটে পিকিং শহর উত্তাল হয়ে ওঠে ছাত্রসমাজের পাশাপাশি সাধারণ মানুষ মেহনতী কৃষক ও শ্রমিক সমাজ এতে অংশ নেয়। এই আন্দোলনের অন্যতম ছাত্র প্রতিনিধি ছিলেন তরুণ নেতা মাউ যে দং।

4 মে আন্দোলনের ফলাফল:—

   ১. মৌলিক পরিবর্তন:—

এই আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চিনা জন মানুষের দেশ প্রেম তথা জাতীয়তা বোধ জাগ্রত হয় এবং চীনে আধুনিকতার পথ তৈরি হয়।

   ২. সাম্যবাদের জনপ্রিয়তা বৃদ্ধি:—

৪ মে আন্দোলনের মধ্য দিয়ে চীনের সাম্যবাদ জনপ্রিয় হয়। ১৯২১ খ্রিস্টাব্দে চীনে কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠিত হয়।

  ৩.আন্তর্জাতিক ক্ষেত্রে প্রতিষ্ঠা লাভ:—

চীনে কমিউনিস্ট পার্টি প্রতিষ্ঠার পর আন্তর্জাতিক রাজনীতিতে চীন তার বলিষ্ঠ পদক্ষেপ ফেলতে সমর্থ হয়। যার ফলে চীনে আন্তর্জাতিক মর্যাদা বহুগুণ বৃদ্ধি পায়।

অন্যান্য প্রভাব:—

এই আন্দোলনের পর চীনের সাহিত্য সংস্কৃতি এক নতুন ধারার বইতে শুরু করে। চীনে একটি সাম্রাজ্যবাদ বিরোধী মঞ্চ গড়ে ওঠে। এতে যোগ দেয় চিনা ছাত্র, বুদ্ধিজীবী, শ্রমিক কৃষক সকলেই।

উপসংহার:—

উপরিউক্ত আলোচনা থেকে বলা যায় মেফোর্থ আন্দোলনের মধ্যে চীনের জাতীয় ও শ্রেণি স্বার্থের প্রতিফলন ঘটেছিল। ঐতিহাসিক জেসানোর মতে ‘ This combined expression of national and class interest was a silent future of the may 4th movement’.

4.1/5 - (9 votes)

Leave a Comment