Ans:-
প্রবাল প্রাচীর:—
ক্রান্তীয় অঞ্চলে বিভিন্ন প্রবাল কীটের দেহাবসের থেকে চুন জাতীয় পদার্থ মিশ্রিত হয়ে এগুলি জমাট বেঁধে চুনা পাথরে পরিণত হয় এবং এই চুনা পাথর সঞ্চয়ের ফলে দীর্ঘাকৃতিক কিংবা বলয় আকৃতি বিশিষ্ট যে সামুদ্রিক ভূমিরূপ তৈরি হয় তাকে প্রবাল প্রাচীর বলে। প্রবাল প্রাচীর কে Rain Forest Occian বলে।
প্রবাল প্রাচীর গড়ে ওঠার অনুকূল অবস্থা গুলি হল—
I. সমুদ্র জলের উষ্ণতা:-
প্রবাল কীটের বংশবৃদ্ধির জন্য সমুদ্র জলের উষ্ণতা ২০ ডিগ্রি থেকে ২১ ডিগ্রি হওয়া প্রয়োজন বা দরকার।
Ii. জলের গভীরতা:-
সমুদ্রের ৬০ থেকে ৭৫ কিমি গভীরতায় প্রবাল কিট ভালোভাবে বাসতে পারে কারণ এই গভীরতা পর্যন্ত সূর্যের আলো পৌঁছানো এবং তাদের সালোকসংশ্লেষ প্রক্রিয়া অব্যাহত থাকে।
Iii. লবনতার পরিমাণ:-
সমুদ্র জলে গড় লবণতার দরকার ২৭% থেকে ৪০% হওয়া দরকার এর চেয়ে বেশি লবনতায় কার্বনেট পরিমাণ কমে যায় ফলে প্রবাল কিট জন্মাতে পারেনা।
Iv. পলি মুক্ত স্বচ্ছ জল ও মিষ্টি জলের প্রভাবমুক্ততা:-
প্রবাল কীটের কলি জমে গেলে এরা অক্সিজেন নিতে পারেনা ফলে মারা যায়। তাই পরিমুক্ত স্বচ্ছ জলের দরকার। আবার পরিষ্কার মিষ্টি জল এদের পক্ষে ক্ষতিকর তাই নদী মোহনা থেকে এরা দূরে থাকে।
রিয়া ও ফিয়ার্ড উপকূলের মধ্যে পার্থক্য:-
১. সংজ্ঞা:-
I. রিয়া:-
কোন নদীর উপত্যকা সমুদ্রের তলদেশে ডুবে থাকলে তখন যে উপকূলের সৃষ্টি হয় তাকে রিয়া উপকূল বলে।
Ii.ফিয়ার্ড:-
কোন হিমবাহ সৃষ্টি উপকূল সমুদ্রতল দেশে নিমজ্জিত হলে যে উপকূল গঠিত হয় তাকে ফিয়ার্ড উপকূল বলে।
আরও পড়ুন:- কাস্ট অঞ্চলে সঞ্চয় কার্যের ফলে গঠিত ভূমিরূপ গুলির বিবরণ দাও। প্রস্রবণ রেখা বলতে কী বোঝো ?
২. ব্যুৎপত্তিগত অর্থ:—
I. রিয়া:—
রিয়া একটি স্পেনীয় শব্দ যার অর্থ হলো নিমজ্জিত নদী উপত্যকা।
Ii. ফিয়ার্ড:—
ফিয়ার্ড যার অর্থ দীর্ঘ ও সংকীর্ণ খারি ,এবং এটি একটি নরেশীয় শব্দ।
৩. আকৃতি:-
I. রিয়া:-
রিয়া উপকূল ফানেল আকৃতি বা V আকৃতির মত হয়।
Ii. ফিয়ার্ড:—
পিরিয়ড উপকূল U আকৃতির হয়।
৪. সৃষ্টির কারণ:—
I. রিয়া:-
ভূ আন্দোলনের ফলে পার্বত্য অঞ্চল বা নদীর উপত্যকা বসে গেলে অথবা অন্য কোন কারণে সমুদ্রপৃষ্ঠ উত্ঠিত হলে পার্বত্য অঞ্চল কিংবা নদীর উপত্যকা সমুদ্রের জলে নিমজ্জিত হয়ে রিয়া উপকূল সৃষ্টি করে।
Ii. ফিয়ার্ড :-
ভূ আলোড়নের ফলে অথবা অন্য কোন কারণে বরফ মুক্ত হিমবাহ উপত্যকা সমুদ্রের জলে আংশিক নিমজ্জিত হয়ে ফিয়ার্ড উপকূল সৃষ্টি করে।
উপর হ্রদ বা লেগুন:-
I.সংজ্ঞা:—
উপকূল অঞ্চলে আবদ্ধ বা প্রায় আবদ্ধ অগভীর লবণাক্ত জলাভূমি উপর হ্রদ বলে।
Ii. সৃষ্টির কারণ:-
উন্মুক্ত সমুদ্রের কিছু অংশ বাধ, স্পিট, প্রবাল প্রাচীর দ্বারা বেষ্টিত থাকে বা ও আলোড়ন এর ফলে লেগুন তৈরি হয়।
Iii. উদাহরণ:-
উড়িষ্যা উপকূলের চিলকা ভারতের বৃহত্তম উপর হ্রদ।