উদারনীতিবাদ কাকে বলে ? উদারনীতিবাদের বৈশিষ্ট্য গুলি আলোচনা করো

Ans:-

উদারনীতিবাদের সংজ্ঞা:-

রাষ্ট্রবিজ্ঞানের উদারনীতিবাদের সাধারণ অর্থ হল রাষ্ট্রীয় কর্তৃত্ববাদের বিরুদ্ধে ব্যক্তি স্বাধীনতা নীতি প্রতিষ্ঠা। এনসাইক্লোপিডিয়া ব্রিটানিকা অনুযাযী, ‘উদারনীতিবাদ হলো এমন এক ধারণা যা সরকারি কাজের নীতি ও পদ্ধতিরূপে ,সমাজ গঠনে নীতি রূপে এবং ব্যক্তি ও সমাজের এক জীবনাদর্শরুপে ‘স্বাধীনতা’ কে প্রতিষ্ঠা করে। উদারনীতিবাদ ব্যক্তি কে সবচেয়ে বেশি গুরুত্ব দেওয়া হয়। উদারনীতিবাদ মনে করে আগে ব্যক্তি পরে রাষ্ট্র। এই তত্ব অনুসারে ব্যক্তির জন্য রাষ্ট্র, রাষ্ট্রের জন্য ব্যক্তি নয়।

উদারনীতিবাদের সংজ্ঞা দিতে গিয়ে হবহাউস তার libarelusam গ্রন্থে বলেছেন, ব্যক্তিত্বের আত্নপরিচালনার ক্ষমতার উপর ভিত্তি করে সমাজ গঠনের আদর্শকে উদারনীতিবাদ বলে। হ্যালেন্ড ল্যাস্কি উদারনীতিবাদ বলতে স্বাধীনতার অনুশাসনকে বুঝিয়েছেন।

WhatsApp Group Join Now
Telegram Group Join Now

উদারনীতিবাদের মুখ্য প্রবক্তা:- 

জে.এস. মিল,বেন্থাম, ল্যাস্কি , গ্রীন, রবার্ট ডাল প্রমুখ হলেন উদারনীতিবাদের মুখ্য প্রবক্তা।

বাস্তব রূপ:-

১৭৭৬ খ্রিস্টাব্দে আমেরিকায় স্বাধীনতার ঘোষণায় এবং ১৭৮৯ খ্রিস্টাব্দে ফরাসি মানবাধিকার সংক্রান্ত ঘটনায় উদারনীতিবাদের আদর্শ বাস্তব রূপে লাভ করে।

উদারধনীতিবাদ বৈশিষ্ট্য:-

সামগ্রিক ভাবে উদারনীতি বাদের মূল বৈশিষ্ট্য গুলি হল–

   1. অবাধ বাণিজ্যনীতি:-

              উদারনীতিবাদ অবাধ বাণিজ্যনীতি গুরুত্ব দেয়। উদারনীতিবাদের প্রবক্তারা মনে করেন রাষ্ট্রের কাজে হর বিদেশী শক্তি হাত থেকে ব্যক্তি তথা রাষ্ট্রের রক্ষা করার এবং রাষ্ট্রের অবান্তরে রাষ্টশক্তি সুযোগ সুবিধা সংরক্ষণ করা। তাই অ্যাডাম স্মিথ মতে ‘ অর্থনৈতিক ক্ষেত্রে অবাধ প্রযোগিতার ফলে সামাজে সর্বাধিক কল্যান সাধিত হয়।

   ২.জনসম্মতি:-

রাষ্ট্রের সমস্ত ক্ষমতার উৎসহ হল জনসম্মতি। তাই উদারনীতিবাদিরা মনে করে ব্যক্তির শক্তিকে অপেক্ষা করে রাষ্ট্রশক্তি স্বীকৃতি লাভ করতে পারে না। এর প্রসঙ্গে গ্ৰিক বলেছেন ‘পাশবিক বল নয়, সম্প্রতি হ্যালো রাষ্ট্রেরভিত্তি‌।

৩. আইনের শাসনের:-

এই মতবাদে আইনের শাসনের বা Rule of low কে অগ্ৰ্যাধিকার দেওয়া হয়। উদারনীতিবাদের প্রার্থমিক দাবি প্রত্যেক ব্যক্তি নিদির্ষ্ট আইনের অনুসারে শাসিত হবে। ব্যক্তির পৌর স্বাধিনতা রক্ষা করার জন্য আইনের সবকিছু ঊর্ধেব করে প্রয়োজন বলে মনে করেন এই দর্শনের প্রবক্তারা।

   ৪.ব্যক্তিগত সম্পত্তি স্বীকৃতি:-

এই মতবাদে ব্যক্তিগত সম্পত্তি অধিকারকে স্বীকার করে বলেছে। তাদের মতে, জনগনের সম্পত্তি অধিকার না থাকলে তাদের কাজকর্মে উৎসাহ আসবেনা, ফলে দেশের সার্বিক উন্নতি বাধাপ্রাপ্ত হবে।

   ৫.প্রাপ্ত বয়স্ক ভোটাধিকার:-

উদারনীতিবাদের অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ বৈশিষ্ট্য গুলি হল জাতি,ধর্ম বর্ণ, স্ত্রী, পুরুষ নির্বিশেষে সকল প্রাপ্ত বয়স্করা ভোটদানের মধ্যে তাদের পছন্দমত প্রার্থি বাছাই করলে, ফলে গনতান্ত্রিক সরকার ও গনস্বারভোমত্ত্ব প্রতিষ্ঠা মাধ্যমে দায়িত্বশীল শাসন ব্যবস্থা প্রতিষ্ঠিত হবে।

   ৬.জনকল্যানকামী রাষ্ট্রনীতি:-

এই মতবাদে Welfare satet এ আদর্শ বিশ্বাসি । তাদের স্লিলির গাল মতে , জনকল্যাণ হল রাষ্টব্যবস্থা সরকার সকল নাগরিকদের জন্য শিক্ষা, সংস্থান ,বাসস্থান, চিকিৎসা সামাজিক নিরাপত্তা প্রতিষ্ঠা ব্যবস্থা করে।

   ৭.অনান্য:-

উপরিউক্ত বৈশিষ্ট্যগুলি ছাড়াও উদারনীতিবাদের অন্যান্য বৈশিষ্ট্য হল অর্থনৈতিক স্বাধীনতা, পৌর ও রাজনৈতিক অধিকারের স্বীকৃতি,ব্যক্তিগত ও পারিবারিক স্বাধীনতা, স্বাধীনতা ও নিরপেক্ষ বিচার ব্যবস্থা শান্তিপূর্ণভাবে সরকারের পরিবর্তন ইত্যাদি।

উপসংহার:-

পরিশেষে বলা যায় রাষ্ট্রের দায়িত্ব, ব্যক্তির অধিকার, বিরুদ্ধচারনের অধিকার প্রবৃত্তি সম্পর্কে উদারনীতিবাদ আলোচনা তাৎপর্যপূর্ণ। এই মতবাদ রাষ্ট্র ও ব্যক্তির সম্পর্কে নতুন রূপ দিয়েছেন।

4/5 - (4 votes)

Leave a Comment